[english_date]।[bangla_date]।[bangla_day]

স্বামী হত্যার অভিযোগে স্ত্রী গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

সোনাই ডেস্ক: গাজীপুরের শ্রীপুরে বৃহস্পতিবার সকালে স্বামী রফিকুল ইসলাম স্ত্রী জীবন্নাহারকে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে গালে একটি থাপ্পর দিয়ে বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমন্ত স্বামীকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে জীবন্নাহার।

পরদিন শুক্রবার বাড়ির পাশের একটি বাঁশঝাড়ের পাশে বস্তাবন্দি অবস্থায় হাত পা বিহীন মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা মাথা ও হাত ডাস্টবিন থেকে এবং পা দুটি টয়লেটের পাশ থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রীসহ দুজনকে আটক করে পুলিশ।

নিহত রফিকুল ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার আব্দুল লতিফের ছেলে। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে শ্রীপুর পৌরসভার মাস্টারবাড়ি এলাকার আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে বসবাস করতেন। শ্রীপুর পৌরসভার ‘হাউ আর ইউ’ কারখানায় কাজ করতেন তিনি। তার স্ত্রী জেবুননেছা মেঘনা কম্পোজিট কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন।

ঘটনার ২৪ ঘন্টা পার হতে না হতেই শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসামী গ্রেফতারে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত স্ত্রী জানান হত্যার লোমহর্ষক কাহিনী।

জীবন্নাহারের বরাত দিয়ে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শহিদুল ইসলাম মোল্লা জানায়, স্বামীর পাশাপাশি চাকরি করতেন স্ত্রী জেবুন নাহারও। যা বেতন পেতেন তা থেকে প্রতিমাসে নিজের মা-বাবাকে কিছু টাকা দিতে চাইতেন তিনি। কিন্তু বাধ সাধেন স্বামী রফিকুল ইসলাম শেখ। শুধু বাধাই নয়, ওইসব ঘটনায় তাকে বিভিন্ন সময় মারধরও করেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন জীবন্নাহার।

ঘটনার দিন স্বামীর সাথে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে রফিকুল তাকে থাপ্পর দিয়ে ঘরের ভিতর ঘুমিয়ে পড়েন। ঘুমন্ত রফিকুলকে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করতে গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহটি ঘরের ওয়ারড্রবের ভেতর রেখে কর্মস্থলে চলে যান। এ সময় তাদের মেয়েটি পাশেই জেবুন নাহারের ছোট বোনের বাসায় ছিল। রাত ৮টার দিকে কর্মস্থল থেকে ফিরে সেখানেই রাতের খাবার খান জীবন্নাহার। আশেপাশের লোকজন ঘুমিয়ে পড়লে ওয়ারড্রব থেকে স্বামীর মরদেহ বের করে বাথরুমে নিয়ে রাত ১১টা থেকে ২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত প্রথমে দুই পা কাটেন, পরে দুই হাত কেটে মাথাও বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন।

৬ টুকরো করা মরদেহটি গুমের উদ্দেশ্যে একটি বস্তায় ভরে ফেলেন। পরে দুই হাত ও বিচ্ছিন্ন মাথা ময়লার ড্রামে ফেলেন। এরপর বাসা থেকে কয়েকশ গজ দূরে ময়লার ভাগাড়ে বস্তাবন্দি দেহটি ফেলে আসেন। এর প্রায় ৪০০ গজ দূরে শৌচাগারের পেছনে নিয়ে ফেলেন পায়ের দুটি টুকরো। শৌচাগারের পাশে দুই হাত ও খণ্ডিত মাথা রাখা ড্রামটিও ফেলে যান। সবশেষে ব্যবহৃত বটিটিও বাইরে লুকিয়ে রাখেন জীবন্নাহার।

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদুল ইসলাম জানান, স্বামীকে হত্যার পর কর্মস্থলে কাজে যান জীবন্নাহার। পুরো ঘটনাটি তিনি ঠান্ডা মাথায় গঠিয়েছেন। গ্রেফতারের সময় সে বিছানায় শুয়ে টিভি দেখছিলেন। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলামের বাবা আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে জেবুন নাহারকে আসামি করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন। এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ও তার এক স্বজনকে আটক করা হয়েছে।

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে সেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *